সুভদ্রা মহাভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তাকে যোগমায়ার অবতারও বলা হয়। কিন্তু আমরা তার সম্পর্কে খুবই কম জানি। তাই আপনাদের কাছে আজ দেবী সুভদ্রা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরব।

জন্ম পরিচয় :

কংসের কারাগার থেকে মুক্তির পর বসুদেবের ঔরসে এবং রোহিণীর গর্ভে দেবী সুভদ্রার জন্ম হয়। তাই তিনি ছিলেন বলরামের সহোদরা অর্থাৎ আপন বোন এবং কৃষ্ণের বৈমাত্রেয় বোন। বৈমাত্রেয় হলেও সুভদ্রা কিন্তু কৃষ্ণে অত্যন্ত আদরের ছিলেন।

বিবাহ :

অর্জুনের বনবাস কিছুকাল অতিবাহিত হয়েছে। তিনি ঘুরতে ঘুরতে প্রভাসতীর্থে উপস্থিত হলেন, যা শ্রীকৃষ্ণের দ্বারকানগরীর অত্যন্ত সন্নিকটে। সেখান থেকে দ্বারকায় পৌঁছালেন। দ্বারকানগরীতে একদিন মাত্র অবস্থান করেই বাসুদেব অর্জুনকে নিয়ে চলে গেলেন রৈবতকে। কোনও এক পূজা ও ব্রত উপলক্ষে এক মহোৎসব ছিল সেদিন রৈবতকে। সেই কারণে যাদব প্রধানরাও সস্ত্রীক ও সবান্ধব উপস্থিত হয়েছেন রৈবতকে।

সেখানে সখি পরিবৃতা হয়ে আছে এক অনিন্দ্যসুন্দরী কন্যা। বর্ণনাতীত তার সৌন্দর্য্য। তাকে দেখে হৃদস্পন্দন স্তব্ধ হলো অর্জুনের। এতো আকর্ষণ তিনি আগে অনুভব করেন নি।

বাসুদেবের কাছে ঐ কন্যার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি জানালেন, এই কন্যা বসুদেব ও বিমাতা রোহিনীর কন্যা সুভদ্রা এবং তার অত্যন্ত প্রিয়। কৃষ্ণ বুঝলেন অর্জুনের অভিলাষ। তিনি বললেন যে সখাকে তিনি সর্বতোভাবে সাহায্য করবেন।

এদিকে বলরাম সুভদ্রার সাথে দুর্যোধনের বিয়ে দিতে চাইলেন। তাই কৃষ্ণের পরামর্শে অর্জুন সুভদ্রাকে হরণ  করেন। এতে বলরাম ক্ষুব্ধ হয়ে অর্জুনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রার আয়োজন করলে, কৃষ্ণ তাকে নিবৃত্ত করেন।  পরে তাদের দ্বারকায় ফিরিয়ে নিয়ে এসে সত্যভামার উদ্যোগে মহাসমারোহে অর্জুনের সাথে সুভদ্রার বিবাহ হয়।

 সন্তান 

অর্জুনের ঔরসে সুভদ্রার গর্ভে অভিমন্যু নামক এক পুত্রের জন্ম হয়। পাণ্ডবদের বনবাসকালে তিনি অভিমন্যুকে নিয়ে দ্বারকায় পিত্রালয়ে বসবাস করেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময় তিনি দ্রৌপদীর সাথে পাণ্ডব শিবিরে বসবাস করতেন। মহাপ্রস্থানের সময় পাণ্ডবরা অভিমন্যুর পুত্র (সুভদ্রার পৌত্র) পরীক্ষিতকে রাজ্যাভিষিক্ত করেন এবং সুভদ্রার উপর ধর্মরক্ষার ভার দিয়ে যান।